রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন
মোঃ মুন্না হুসাইন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, কালের খবর : হাটে পাটের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা। আজ বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার নওগাঁর হাটে।
হাটে পাটের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা।
পাট চাষে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে কৃষকের। মজুরির ব্যয়ও বেড়েছে। সঙ্গে সার, কীটনাশক, বীজসহ চাষাবাদের খরচও বাড়তি। সব মিলিয়ে প্রতি মণ পাটের উৎপাদন খরচ বেড়েছে গড়ে ৫০০ টাকা। কিন্তু বাজারে পাটের দাম পড়তির দিকে। সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাটের দাম প্রতি মণে গড়ে ৬০০ টাকা কমেছে। এতে লোকসানে পড়েছেন চাষিরা।
কৃষকেরা বলছেন, গত বছর প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগে বাজারে ওঠা নতুন পাট ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পাটের দাম কমছে। গত সোমবার থেকে পাটের দাম কমতে কমতে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় তাঁদের উৎপাদন খরচ তুলতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, তাঁদের কাছে এখনো গত বছরের পাট রয়েছে। এ জন্য তাঁরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন কম। এ ছাড়া বাজারে পাটের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে।
কৃষক ও উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার তাড়াশ উপজেলায় ৪৭৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। পাট চাষের সময় নানা বিড়ম্বনার শিকার হন চাষিরা। প্রথমত, আবাদের সময় খরা থাকায় পাটগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে পাট কাটার সময় পানির অভাবে অনেক কৃষককে পাট জাগ দিতে তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়েছে। এ জন্য প্রতি বিঘায় তাঁদের অতিরিক্ত চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে। এর বাইরে শ্রমিকের মজুরি বাড়া, বীজ, কীটনাশক, সারের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার প্রতি বিঘায় অন্তত পাঁচ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে কৃষকদের।
কৃষকেরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে গিয়ে তাঁদের প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি মণ পাটের উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকার বেশি। মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ সময় কৃষকেরা মোটামুটি লাভে ছিলেন। কিন্তু এখন নিম্নমানের পাটের দাম ১ হাজার ৮০০, মধ্যম মানের পাট ২ হাজার ও ভালো পাট ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নিম্ন ও মধ্যম মানের পাট বেশি হওয়ায় প্রতি মণ পাটে গড়ে ৩০০ টাকা লোকসান হচ্ছে চাষিদের।